প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক: ঢাকায় সফররত চীনা চিকিৎসক দলের সুপারিশ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। রবিবার (২১ জুন) বিকালে ভার্চুয়াল মতবিনিময় অনুষ্ঠানে চিকিৎসক দলের বিশেষজ্ঞ ও ঢাকায় চীনা দূতাবাসের উপ-প্রধান হুয়ালং ইয়ান এ তথ্য জানিয়েছেন। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বলা হয়, চীনা মেডিক্যাল টিম বিভিন্ন হাসপাতাল পরিদর্শন ও সরকারের বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আগামীকাল সোমবার (২২ জুন) তারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর সুপারিশ তৈরি করে দূতাবাসের মাধ্যমে সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি পরিদর্শন ও করোনা রোধে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে ১০ সদস্যের চীনা চিকিৎসক দলটি গত ৮ জুন ঢাকায় আসে। আগামীকাল সোমবার তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে। করোনাভাইরাসের পিক টাইমে বাংলাদেশ পৌঁছেছে কিনা, মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এমন প্রশ্ন করা হলে চীনা দূতাবাসের উপ-প্রধান হুয়ালং ইয়ান বলেন, ‘এটি বলা মুশকিল। তবে লকডাউন অত্যন্ত কার্যকর এবং চীনে এটি খুব ভালো কাজ করেছে। ওই সময়ে চীনের অন্যান্য জায়গা থেকে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা উহানে গিয়েছিলেন। এমনকি খাদ্যও পাঠানো হয়েছিল।’ বিনা অর্থে সেবাও দেওয়া হয়েছিল বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশে লকডাউনের সুপারিশ করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যাঁ, এটি অত্যন্ত কার্যকর। অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এবং পুনরায় শুরু করার জন্য চিহ্নিত করতে হবে কোন অঞ্চলে রোগটি বেশি। ফ্যাক্টরি চিহ্নিত করতে হবে, যেখানে এই রোগ ছড়াতে পারে। র্যাপিড টেস্ট করা উচিত কিনা প্রশ্নে হুয়ালং ইয়ান বলেন, ‘আমরা এটি সুপারিশ করি না। সবচেয়ে ভালো হচ্ছে পিসিআর টেস্ট।’ র্যাপিড টেস্ট হচ্ছে অ্যান্টিবডি টেস্ট এবং প্রথম সপ্তাহে রোগীর মধ্যে অ্যান্টিবডি থাকে না বলে তিনি জানান।
প্লাজমা ট্রিটমেন্টের ক্ষেত্রে তিনি বলেন, ‘সব রোগীর ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা যায় না। শুধু বিশেষ ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা উচিত। চীনে পাচঁটি কোম্পানি ভ্যাকসিন তৈরি করছে। ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শেষ হয়ে গেলে বাংলাদেশ হবে প্রথম দেশগুলোর মধ্যে একটি, যারা ভ্যাকসিন পাবে।
এই রোগকে ভয় পাওয়া থেকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়ে ইয়ান বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত রোগী পুষ্টি পাচ্ছে, আইসোলেশনে থাকছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ডায়েট নিয়ন্ত্রণের কোনও প্রয়োজন নেই। করোনাভাইরাস আগামী ২ থেকে ৩ বছর বাংলাদেশে থাকবে’, এমন মন্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। এটি নির্ণয় করার জন্য বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ দরকার।
মাস্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য যে মাস্ক ব্যবহার করা হয়, সেটি ভিন্ন এবং অত্যন্ত উন্নতমানের বলে তিনি জানান। গ্লাভস ব্যবহারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত মন্তব্য করে হুয়ালং ইয়ান বলেন, ‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যারা গ্লাভস ব্যবহার করেন, তারা অমনোযোগী হন এবং অনেক ক্ষেত্রে মুখে হাত দেন, যার মাধ্যমে দ্রুত রোগ ছড়ায়।’
বাংলাদেশে করোনার সচেতনতার বিষয়ে তিনি বলেন, মেডিক্যাল টিম এ বিষয়ে হতাশ।